প্রকাশিত: Wed, Apr 19, 2023 3:19 AM
আপডেট: Sun, Dec 7, 2025 12:52 AM

ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় আফগানিস্তান শীর্ষে, পাকিস্তান ৬ষ্ঠ ও ভারত ১৩তম

বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে দুই ধাপ উন্নতি করে বাংলাদেশ ৪৩তম

জাফর খান: দ্য ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক অ্যান্ড পিস (আইইপি) প্রকাশিত এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৩তম। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদের তেমন কোনো প্রভাব না পড়া ভূটান ৯৩তম অবস্থান নিয়ে বেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে। আর এর পরেই রয়েছে বাংলাদেশ। এতে করে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশর অবস্থান দাঁড়িয়েছে দ্বিতীয়। আইইপি ওয়েবসাইট 

বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান যুক্তরাজ্যের ঠিক আগেই। যার মানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর এই দেশটি থেকেও সন্ত্রাসবাদের কম ঝুঁকিতে রয়েছে। বাংলাদেশের চেয়ে কিছুটা কম পয়েন্ট পেয়ে যুক্তরাজ্যের অবস্থান ৪২তম। তালিকায় জাপান ৬২তম, কানাডা ৫৪তম এবং নিউজিল্যান্ড ৪৬তম।

প্রকাশিত রিপোর্টে আঞ্চলিক ক্ষেত্রেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সূচকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান যৌথভাবে প্রথম। বাংলাদেশের মতো নেপালও দুই ধাপ এগিয়েছে। পাশাপাশি নেপালের অবস্থান মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সারিতে রয়েছে।

সূচকের শীর্ষ স্থানটি দখলে করে রেখেছে দক্ষিণ এশিয়ারই আরেক দেশ আফগানিস্তান। দ্বিতীয় অবস্থানে বুরকিনা ফাসো। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে যথাক্রমে রয়েছে সোমালিয়া, মালি এবং সিরিয়া। 

২০২২ সালে বাংলাদেশে মাত্র দুটি সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইইপি’র রিপোর্টে। পাশাপাশি প্রতিবেশী নেপালেও মাত্র দুটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ দশে জায়গা করে নেওয়ার তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে ৬ষ্ঠ অবস্থানে। আর বিগত বছরের মত ভারত তালিকার ১৩তম স্থান নিয়ে অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা ও নেপাল রয়েছে যথাক্রমে ২৯ ও ৩৬তম অবস্থানে। 

সন্ত্রাসবাদের কারণে মৃত্যু হারের দিক থেকে সারা বিশ্বের মোট মৃত্যুর ১৫ শতাংশই দেখা যাচ্ছে বুরকিনা ফাসোতে। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হামলা চালিয়ে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইসলামিক স্টেট বা আইএস। ২০২২ সালে মোট ৪১০টি হামলা পরিচালনা করে ১ হাজার ৪৫ জনকে হত্যা করেছে এই গোষ্ঠীটি। দ্বিতীয় অবস্থানে আল-শাবাব,  মোট হামলা ৩১৫ ও হত্যা ৭৮৪ জন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আইএস খোরসান প্রদেশ, মোট হামলা ১৪১ ও হত্যা ৪৯৮ জন। 

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিশ্বের মোট মৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে এককভাবে এগিয়ে আছে বুরকিনা ফাসো। ভয়াবহ যে কয়টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের হামলাটি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির ২ তারিখে সংঘটিত ওই হামলায় মোট ১৯৫ জন নিহত হয়েছিলেন। আর হামলাটি পরিচালনার দায় স্বীকার করেছিল বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) । 

গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স বা বৈশ্বিক  সন্ত্রাসবাদ সূচকে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে ৯ শতাংশ। আর এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চলের তালিকায় সন্ত্রাসী অস্থিরতা ও কর্মকান্ডের দিক হতে ৭ দশমিক ৯৭৭ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মিয়ানমার। 

মূলত যে আটটি ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে রিপোর্টটি তৈরি করা হয় সেগুলো হল- ভাল সরকার ব্যবস্থা, সম্পদের সুষম বণ্টন, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ, দুর্নীতির নিম্নহার, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক, উন্নত মানব সম্পদ ও সবার অধিকার নিশ্চিত। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব